Sunday 2 April 2017

মনোহারি মুরগী

কত্তার বন্ধুদের জন্য মাংস রান্না করে পাঠাতে হবে। এদিকে কত্তার গাঁইগুঁই, "কি করে নিয়ে যাব? এদিকে ওদিকে ঝোল গড়াবে তো!" কি করা যায় ভাবতে ভাবতে মাথায় এলো মাংসটা ভেজে নিয়ে কষিয়ে যদি রান্না করি, তাহলে খেতেও জমবে আবার কত্তার খুঁতখুঁতানিরও সমাধান হবে। তেনার কলেজে পরীক্ষা চলছে, ব্যস্ততার শেষ নেই; তাই নিজেই টুকটাক যা লাগবে কিনে এনে রেঁধে ফেললাম "মনোহারি মুরগী"।
আমি বানিয়েছিলাম কেজি তিনেকের। এখানে এক কেজির হিসেবে সবিস্তারে বলছি।

টুকটাক যা লাগবেঃ

(i) মুরগীর মাংস (১ কেজি)
(ii) পিঁয়াজ (বড় চারটে, ১টা ডুমো করে কাটা, ৩ টে স্লাইস করে কাটা)
(iii) রসুন (গোটা ১ টা)
(iv) আদা বাটা (বড় ১ চামচ)
(v) ক্যাপসিকাম কুচি (৪ চামচ)
(vi) কাঁচালঙ্কা (যে যেমন ঝাল খাবেন)
(vii) ধনেপাতা কুচি (বড় ২ চামচ )
(viii) মেথি (ছোট চামচের ১ চামচ)
(ix) শুকনো লঙ্কা (২-৩টে)
(x) টক দই (১০০ গ্রাম)
(xi) টমেটো (২টো বড়)
(xii) কসুরি মেথি (এ চামচ)
(xiii) দুধ (১ কাপ)
(xiv) চিনি (১ চিমটে)
(xv) নুন
(xvi) সাদা তেল
(xvii) হলুদ
(xviii) সরষের তেল (১ চামচ)
(xix) চাটনি (বড় চামচের ২ চামচ)
(xx) মনোহারি মিশ্রণ (বড় চামচের ২ চামচ)

শেষ দুটো উপকরণ বিশেষভাবে বানিয়ে নিতে হবে। চাটনি বানানোর জন্য লাগবেঃ (i) বীজ ছাড়ানো পাকা তেঁতুলের কাৎ  - ২ চামচ (একছড়া পাকা তেঁতুল সামান্য ইষদুষ্ণ জলে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে মিনিট পাঁচেক। তারপর হাতে চটকে নিলেই কাৎ বেরিয়ে আসবে।), (ii) গুড় - ১ চামচ, (iii) ভাজা মশলা - ছোট ১ চামচ (শুকনো খোলায় জিরে, শুকনো লঙ্কা, পোস্ত নেড়ে, গুঁড়ো করে নিতে হবে।) (iv) নুন - ১ চিমটে।
একটা ছোট পাত্রে তেঁতুলের কাৎ ঢেলে গ্যাসে চড়িয়ে ফুটতে দিতে হবে। ফুটে একটু ঘন হয়ে এলে এক চিমটে নুন আর গুড় মিশিয়ে আরও একটু ঘন হলে গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে। মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হলে তার মধ্যে ভাজা মশলা মিশিয়ে দিলেই চাটনি রেডি।

মনোহারি মিশ্রণ বানাতে লাগবেঃ (i) কাজু - ২০ গ্রাম, (ii) নারকেল কোড়া - ২ চামচ, (iii) এলাচ দানা - ১০-১২ টা, (iv) দুধ - আধ কাপ। সমস্ত উপকরণ একসাথে গ্রাইন্ডারে দিয়ে পেস্ট করে নিলেই মনোহারি মিশ্রণ রেডি।

রান্না শুরুঃ

মাংস ভালো করে ধুয়ে, জল ঝরিয়ে, চাটনি, হলুদ, সরষের তেল আর নুন দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে কমপক্ষে ঘন্টাখানেক। সাদা তেলে ম্যারিনেট করা মাংসগুলো একটা একটা করে ভেজে নিতে হবে। ঐ মাংস ভাজা তেলেই মেথি ফোড়ন দিয়ে ভালো করে ভেজে মেথি গুলো তুলে নিতে হবে। এবার ঐ তেলের মধ্যে শুকনো লঙ্কা আর কুচিয়ে রাখা পিঁয়াজের অর্ধেক দিয়ে ভাজতে হবে। ডুমো করে কাটা পিঁয়াজ, রসুন, আদাবাটা, ধনেপাতা কুচি, ক্যাপসিকাম কুচি, টমেটো, নুন, হলুদ একসাথে গ্রাইন্ডারে দিয়ে একটা পেস্ট তৈরী করে ভাজা পিঁয়াজের মধ্যে ঐ পেস্টটাকে দিয়ে কষাতে হবে। টক দইয়ের মধ্যে সামান্য চিনি দিয়ে ফেটিয়ে ঐ মশলার মধ্যে মিশিয়ে কষাতে হবে। মশলা থেকে তেল ছাড়লে ভাজা মাংস গুলো ওর মধ্যে দিতে হবে। ভাজা মাংস আর মশলা ভালোভাবে মিশে গেলে শুকনো খোলায় নাড়া কসুরি মেথি গুঁড়ো, গরম মশলা দিয়ে কষাতে হবে। ৫ মিনিট পরে মনোহারি মশলা এবং বাকি আধ কাপ দুধ মিশিয়ে high flameএ ২ মিনিট নড়াচড়া করে গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে। এবার আরেকটা কড়ায় তেল গরম করে বাকি পিঁয়াজগুলো deep fry করে তুলে নিয়ে মাংসের ওপর ছড়িয়ে দিলেই মনোহারি মুরগী is ready to serve.


বিঃ দ্রঃ

(i) মাংসের টুকরো গুলো ছোট ছোট হলে ভালো হয়।
(ii) চাটনির বদলে লেবুর রস ম্যারিনেশনে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু চাটনি ব্যবহার করলে যে রং আসবে তা লেবুর রসে আসবে না।
(iii) তেঁতুলের কাৎএর পরিমাণ সম্পর্কে সতর্ক থাকবেন। বেশী হয়ে গেলে মাংসের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।
(iv) মশলাপাতির পরিমাণ নিজের স্বাদমতন, স্বাস্থ্যমতন এবং ইচ্ছেমতন কমিয়ে বাড়িয়ে নিতে পারেন।
(v) রুটি বা পরোটার সঙ্গে মনোহারি মুরগী ভালো জমে।
(vi) কাইয়ের পরিমাণ বাড়াতে চাইলে মনোহারি মশলা মেশানোর পর একটু বেশী পরিমাণে দুধ মিশিয়ে দেবেন।
(vii) এই রান্নায় জল মেশাবেন না। জল মেশালে স্বাদ কমে যাবে।
(viii) ইচ্ছে হলে খাসির মাংসও এইভাবে রান্না করে দেখতে পারেন।

দো-দৈ মুরগি

এক একটা দিন এমন হয়, সেদিন মন - মাথা পুরো তেতো হয়ে থাকে। কেন হয়, কি জন্য হয় ছাতার মাথা কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। আজ তেমনই একটা দিন ছিল। সারাদ...